সুধীর সাহা (মেজর সুধীর সাহা)

জীবনের অর্থ যার কাছে চলতে থাকা, থেমে থাকা নয় তেমনি কর্মচঞ্চল এক মানুষের নাম সুধীর সাহা, যিনি অধিক পরিচিত মেজর সুধীর সাহা নামে। ১৯৫৭ সালের ৩০ এপ্রিল ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ থানাধীন শিকারী পাড়া নামের এক অখ্যাত গ্রামে জন্ম নিয়েছিলেন বর্তমানের এই খ্যাতিমান মানুষটি। তার চঞ্চলতা, দৃঢ়তা আর ব্যক্তিসত্তা বুঝি ছোট বেলায়ই ধরা পড়ে অন্যদের চোখে। সেই ছোট্ট বেলাতেই কেউ তাকে দারোগা, কেউ বিচারক ইত্যাদি বিভিন্ন নামে ডাকতেন। কিন্তু সুধীর সাহা ছিলেন নির্বিকার। মধ্যবিত্ত পরিবারের মুখ উঁচু করা সন্তানটি প্রতি শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করলে পরিবারের মানুষগুলোরও চোখ পড়ে তার ওপর। জন্মের পর বাবা যখন জানলেন-তিন পুত্রসন্তানের পর চতুর্থ সন্তানটিও তার পুত্র, তখন বাবা এই সদ্যজাত শিশু সন্তানকে না দেখেই বলেছিলেন-ফেলে দাও ওকে। কন্যাসন্তান নয়, তাই আমার আর সন্তানের প্রয়োজন নেই। বাবার সেই অভিমান হয়তো অনেকাংশেই ভেঙ্গে গিয়েছিল, যখন তিনি দেখেছিলেন তার শিশুপুত্রটি খুব ভাল ছাত্র। কিন্তু বেশিদিন বাবার আদর পেতে পারেননি মেজর সুধীর সাহা। শিশু বয়সেই পিতৃহারা হয়েছিলেন তিনি। দারিদ্রতার মাঝে মানুষ হওয়া এই মানুষটি একদিন শিকারী পাড়া টি কে এম স্কুলের চৌকাঠ পেরিয়ে ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। তারপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকান্ডে নিজেকে ব্যাপৃত রাখেন। এলএল.বি (অনার্স) আর এলএল.এম শেষ করে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্যরূপে ওকালতি পেশায় নাম লেখান এই মানুষটি। তারপর একসময় কালো কোট গায়ে দাঁড়িয়ে যান ঢাকা জজ কোর্টের আদালত চত্বরে।

সদ্য পাস করা একজন আইনজীবী হিসাবে ঢাকা জজ কোর্টের আদালত পাড়ায় ঘুরাঘুরি করার সুযোগ মিললেও পকেটে তার তেমন অর্থ আসা তখনও শুরু হয়নি। ওদিকে সদ্য বিয়ে করা পরিবারের কর্তা হিসাবে সংসার চালানোর দায়িত্বও তার ঘাড়ে। হিমশিম খাচ্ছিলেন তিনি। সিনিয়র আইনজীবী মাহতাব উদ্দিন আহমেদ-এর হাত ধরেই সুধীর সাহার ওকালতি শুরু। মাহতাব সাহেব শুরুতেই বুঝে গিয়েছিলেন, ওকালতিতে সদ্য আসা মানুষটি বেশ চটপটে এবং কাজে পটু। তাই কিছু বাড়তি কাজের ভার পড়তো সুধীর সাহার ওপর। তারপরও সিনিয়ারের হাত গলে অর্থ আসার রাস্তা ততখানি প্রশস্ত ছিল না তার পারিবারিক প্রয়োজনের তুলনায়। অন্যদিকে সুধীর সাহার অভাব শুধু পেটেই নয়, অভাব ছিল মনেও। জজ কোর্টের চৌকাঠে সীমাবদ্ধ থাকার মানুষ তিনি নন। ছটফট করতে থাকেন তিনি কখন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে প্র্যাকটিস করবেন। মাহতাব উদ্দিন আহমেদ জজ কোর্টের প্রভাবশালী আইনজীবী হলেও হাইকোর্টে কালেভদ্রে যেতেন। একদিন এক মামলার সুবাদে পরিচয় ঘটলো তখনকার আইনজীবী জিল্লুর রহমান সাহেবের সাথে (পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন)। জিল্লুর রহমান সাহেব সুধীর সাহাকে পরামর্শ দিলেন হাইকোর্টে চলে যেতে। এবার নতুন আরও একটি ধাপ। সুধীর সাহা শরণাপন্ন হলেন তৎকালীন স্বনামধন্য আইনজীবী এস আর পালের অফিসে। এস আর পালের জুনিয়র হওয়ার জন্য লাইন ধরে তুখোড় আইনজীবীরা ভিড় করে আছেন তখন। কিন্তু সুধীর সাহার প্রবেশাধিকার ঘটে গেল সহজ পথে। মুক্তধারার চিত্তরঞ্জন সাহার সুপারিশে এস আর পাল সম্মত হলেন জুনিয়র হিসেবে সুধীর সাহাকে গ্রহণ করতে। এবার শুরু হলো দু’ধারায় আগমন। কোনো একদিন জজ কোর্টের চত্বরে, কোনো একদিন হাইকোর্টের চত্বরে। এর ফলে ভবিষ্যতের দুয়ার হয়তো খোলা হলো একটু বেশি, কিন্তু পকেটে পয়সা আসতে থাকল কম করে। তবুও চলতে থাকল এমনভাবেই। কিন্তু খুব বেশিদিন এভাবে চলল না। মায়ের খুব শখ ছিল, তার ছেলে বিচারকের সামনে তুখড়ভাবে মামলা পরিচালনা করবে, আর মা তা দেখবেন। কিন্তু ছেলের ইচ্ছা মনে হয় অন্য কিছুই ছিল।

কাউকে না জানিয়ে একদিন যেমন তিনি বিয়েটাও করেছিলেন, ঠিক কাউকে না জানিয়ে একদিন সামরিক ও বেসামরিক উভয় চাকরিতেই আবেদন করে বসেন। চুড়ান্ত পরীক্ষা শেষে দু’জায়গাতেই সুযোগ পেয়ে যান তিনি। বেসামরিক সরকারি চাকরি- ম্যাজিষ্ট্রেটের পদ আর সামরিক চাকরি- সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসাবে জাজ অ্যাডভোকেটের চাকরি। দুটোই সেই সময়ে তার কাছে লোভনীয়। কিন্তু খুব সাধারণভাবে হিসাব করে তিনি বের করলেন – সেনাবাহিনীর চাকরিটি তার জন্য উপযুক্ত হবে। একটু বেতন ও সুযোগ-সুবিধা বেশি, আবার সমাজের লোক একজন সংখ্যালঘু মানুষকে ভিন্ন চোখেও দেখবে। চলে গেলেন তিনি সেনাবাহিনীর চাকরিতে। দশটি বছর চলে গেল এভাবে। সেনাবাহিনীর জাজ অ্যাডভোকেট জেনারেল ডিপার্টমেন্টে চাকুরিকালীন দশ বছরের মধ্যে তিনি বাড়তি কিছু দায়িত্বও পালন করেছেন। বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্টে কোর্ট মার্শাল পরিচালনা ছাড়াও তিনি প্রেষণে বিডিআর এবং দুর্নীতি দমন ব্যুরোতেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। কিছুটা অপরাজনীতির শিকার এবং কিছুটা স্ব-ইচ্ছার বশবর্তী হয়ে সুনামের সাথে সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে দিতে মনস্থ করলেন তিনি। হঠাৎ তার মনে হল, বাঁধা-ধরা কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকার মানুষ নন তিনি। তাই একদিন মেজর সুধীর সাহা হয়ে উঠলেন মেজর (অব.) সুধীর সাহা।

আবার সেই পুরোনো পথ – কালো কোট আর কোর্টের গলি। কিন্তু এবার তিনি হাত দিলেন ওকালতির একটি নতুন দিগন্তে। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, প্রাক্তন বিচারপতি দেবেশ ভট্টাচার্য এবং বিশিষ্ট আইনবিদ গাজী শামছুর রহমান সমন্বয়ে গড়ে তুললেন ‘ল এন্ড ল’ নামের একটি ব্যাতিক্রমধর্মী কনসালটেন্সি আইন পেশার প্রতিষ্ঠান। এই বিশাল কাজে এবং স্বনামধন্য কয়েকজন বিচারক-আইনবিদকে একত্রিত করার কাজেও তাকে সাহায্য করলেন মুক্তধারার চিত্তরঞ্জন সাহা। কিন্তু সেখানেও বাঁধ সাধল প্রচলিত অপরাজনীতির কালচার। ‘ল এন্ড ল’-তে কয়েকজন স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব একত্রিত হওয়ার ফলে তাতেও বাঁকা চোখ পড়ল তৎকালীন সরকারের। তিনি তখন আবার নতুন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন।

স্বেচ্ছায় চাকুরি ছাড়ার এক বছর পর ১৯৯৩ সালে তিনি স্বপরিবারে স্ত্রী কল্যাণী সুধীর, বড় মেয়ে পৃথুলা প্রসূন এবং ছোট মেয়ে প্রমিতি প্রসূনকে নিয়ে চলে গেলেন সুদূর কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে। প্রথমে মন্ট্রিয়েল এবং তারপর টরন্টোতে স্থায়ীভাবে পরিবারসহ বসবাস শুরু করলেন। সৃষ্টিকর্তা যার সহায় এবং ইচ্ছা যখন সৎ এবং প্রবল, তাঁকে ঠেকায় কে! ইমিগ্রেশন আইন সংক্রান্ত কয়েকটি পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠানে ঘোরাফেরার পর বিখ্যাত ও সুপ্রতিষ্ঠিত ইমিগ্রেশন ল ফার্ম জানসেন এন্ড ম্যাকেঞ্জি-এর কর্ণধার মি. ম্যাকেঞ্জির প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ পান। নিজের অসীম মনোবল এবং মি. ম্যাকেঞ্জির শুভ কামনা সম্বল করে কানাডা গমনের এক বছরের মাথায় ১৯৯৪ সালে কানাডা এবং বাংলাদেশে গড়ে তুললেন নিজস্ব ইমিগ্রেশন আইন পেশার কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান ‘আইএলসিবি’। ‘আইএলসিবি’ খুব দ্রুত হয়ে উঠল বাংলাদেশ থেকে ইমিগ্রেশন নিয়ে কানাডা যাওয়া মানুষদের সর্বাপেক্ষা ভরসার প্রতিষ্ঠান। মেজর সাহা কখনও বাংলাদেশ, কখনও কানাডা এমনি করে পার করে দিলেন পঁচিশ বছরেরও বেশি সময়। বাংলাদেশ, কানাডা ছাড়াও তিনি ব্যবসার কাজে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, বেলজিয়াম, ইতালী, সাইপ্রাস, ভারত, দুবাই, হংকং, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ফ্রান্স, গ্রীসসহ বহু দেশ ভ্রমণ করেন। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ থেকে ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবী, ছাত্রসহ হাজার হাজার বাঙালি এই প্রতিষ্ঠানের সাহায্য নিয়ে কানাডাতে স্থায়ীভাবে বসবাস করার পথ খুঁজে পেয়েছেন।

মেজর (অব.) সুধীর সাহা কানাডা এবং বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানের নামগুলো হচ্ছে :

  • সদস্য – বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, বাংলাদেশ
  • আজীবন সদস্য – বাংলা একাডেমি, বংলাদেশ
  • আজীবন সদস্য – বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলাদেশ
  • চেয়ারম্যান – কল্যাণী ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ
  • সভাপতি – ইছামতি নদী বাঁচাও আন্দোলন, বাংলাদেশ
  • সদস্য – রেগুলেটেড কানাডিয়ান ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টস (আর সি আই সি)
  • সদস্য – কানাডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব প্রোফেশনাল ইমিগ্রেশন কনসালট্যান্টস, কানাডা
  • আন্তর্জাতিক মার্কেটিং এজেন্ট – সেন্ট কিট্স্ এন্ড নেভিস, সেন্ট লুসা, এন্টিগুয়া এন্ড বারবুদা, গ্রেনাডা।

মেজর (অব.) সুধীর সাহা লেখালেখি নিয়েও ব্যস্ত থাকেন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য দৈনিক প্রত্রিকায় তার লেখার অনেকটাই রাজনীতি এবং সমাজ সচেতনমূলক প্রবন্ধ। জীবনধর্মী বাস্তব সামাজিক সমস্যা প্রায়ই তার লেখায় ফুটে ওঠে। শুধু পত্রিকার লেখাতেই সীমাবদ্ধ নন সুধীর সাহা। তার উল্লেখযোগ্য ২৩ টি বই প্রকাশিত হয়েছে ইতিমধ্যে। সেই ১৯৯১ সালে তার প্রথম বই প্রকাশিত হয় বাংলা একাডেমি থেকে। তারপর একে একে আরও ২২ টি বই প্রকাশিত হয়। বইগুলোর নাম, বিবরণ এবং প্রকাশক ও প্রকাশের সময় নিম্নরূপ:

নং বইয়ের নাম বিবরণ প্রকাশক ও প্রকাশের সময়
মাদকদ্রব্য, সমাজ ও আইন প্রবন্ধ বাংলা একাডেমি (১৯৯১)
বিপন্ন ভালবাসা উপন্যাস মুক্তধারা (১৯৯৫)
ঠিকানা নাটক অমিয় ধারা (২০১৬) ২য় সংস্করণ
একটি জীবন ও আমরা ছোট গল্প অমিয় ধারা (২০১৬) ২য় সংস্করণ
নির্বাচিত কলাম (১ম খন্ড) প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০১৬) ২য় সংস্করণ
এলোমেলো চিন্তা-ভাবনা প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০১৬) ২য় সংস্করণ
নির্বাচিত কলাম (দ্বিতীয় খন্ড) প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০১৬) ২য় সংস্করণ
বাংলাদেশ : এগিয়ে যাওয়ার এখনই সময় প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০১৭)
নির্বাচিত কলাম (তৃতীয় খন্ড) প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০১৭)
১০ অবাসযোগ্য পৃথিবী কত দূরে প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০১৯)
১১ রাজনীতি এবং … প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০১৯)
১২ চেতনাই বাঁচিয়ে রাখবে বাঙালি সংস্কৃতি প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০২০)
১৩ শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০২০)
১৪ বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাস গবেষণাধর্মী অমিয় ধারা (২০২০)
১৫ World History of Civilization গবেষণাধর্মী অমিয় ধারা (২০২০)
১৬ Investment Migration  গবেষণাধর্মী অমিয় ধারা (২০২০)
১৭ How Far Uninhabitable World প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০২০)
১৮ পৃথিবীর সেরা ধনীদের জীবনকাহিনী গবেষণাধর্মী অমিয় ধারা (২০২১)
১৯ ধর্ম উত্থানের ইতিহাস গবেষণাধর্মী অমিয় ধারা (২০২১)
২০ প্রবন্ধমালা প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০২১)
২১ অনন্ত মুখের ঝুলন্ত শিকার প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০২২)
২২ সবার আগে ইনসানিয়াৎ প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০২২)
২৩ গল্প নয়, সত্যি প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০২২)
২৪ ভুলতে পারি না সেই জেনোসাইড প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০২৩)
২৫ আমরা-ওরা’-র বিভাজন প্রবন্ধ অমিয় ধারা (২০২৩)

মেজর (অব.) সুধীর সাহা এবং তার প্রতিষ্ঠান ‘আইএলসিবি’ কিংবা ‘কল্যাণী ফাউন্ডেশন’ আজ বাংলাদেশে শুধু একজন নাম নয় বরং তার চেয়েও অনেক বেশি। ‘ইছামতি নদী বাঁচাও আন্দোলন’ করতে গিয়ে তিনি পরিবেশ রক্ষার যুদ্ধে একটি সৈনিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইমিগ্রেশন নিয়ে দীর্ঘ সময় কাজ করার ফলে তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও একটি সুপরিচিত নাম। তার দক্ষতা, সততা তাকে সীমাহীন আকাশের অসীম তারার বুকে জ্বলজ্বল করে বেঁচে থাকার প্রেরণা জুগিয়েছে। গর্ব করার মতো প্রথিতযশা দুই কন্যার বাবা সুধীর সাহা তার স্ত্রীর জন্যও গর্বিত। স্ত্রী তার পাশে থেকে তাকে উৎসাহ জুগিয়ে চলেছেন অবিরামভাবে। তিনি তার ব্যবসার পাশে আছেন, তার লেখার সহায়তায় আছেন, তিনি সর্বত্র ছায়ার মতো থেকে স্বামীকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে সমাজ বিজ্ঞানে মাস্টার্স করলেও আজ সফল ব্যবসায়ী স্বামীর পাশে তিনিও একজন সফল ব্যবসায়ী হিসাবে নিজেকে তুলে ধরেছেন।

একটি চমৎকার পরিবারের মাঝে দাঁড়িয়ে মেজর (অব.) সুধীর সাহা তার স্বভাবসুলভ প্রতিভা ছড়িয়ে বিমোহিত করেছেন বাংলাদেশ ও কানাডার বাঙালি সমাজকে। কালক্রমে সুধীর সাহা নামটি এখন আর শুধু একটি নামই নয়, একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। লেখক, গবেষক, ব্যবসায়ী, ইমিগ্রেশন আইন বিশেষজ্ঞ, সমাজ সেবক অনেকগুলো বিশেষণেরই অধিকারী এই প্রথিতযশা ব্যক্তিটি। তবে তার সবচেয়ে বড় পরিচয় সম্ভবত তিনি একজন সাদা মনের মানুষ। তিনি সমাজকে ভালোবাসেন, মানুষকে ভালোবাসেন, প্রকৃতিকে ভালোবাসেন। এখানেই বুঝি তার জীবনের সবচেয়ে বড় পরিচয়টি লুকিয়ে আছে। তৃণমূল থেকে আসা, ইছামতি নদীর পাড়ের শিকারীপাড়া গ্রামের ‘সুধীর’ ভবিষ্যতে আর কত ঔজ্জ্বল্য ছড়ায় তা দেখার জন্য এলাকাবাসী ও পরিচিতজনেরা গভীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।